হিন্দুধর্মের চর্চিত অন্যতম মহাকাব্য রামায়ণ অনুসারে জটায়ু ছিলো একটি দৈবপক্ষী এবং সূর্যদেবের অশ্বচালক অরুনের কনিষ্ঠ পুত্র৷ তার জ্যেষ্ঠভ্রাতা সম্পাতি ছিলেন একজন অর্ধদেহী দেবতা এবং রামের পিতা দশরথের পরমমিত্র৷ হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণ অনুসারে রাবন যখন সীতাকে হরণ করে নিজ রাজ্যে নিয়ে যেতে চান, সেই দৃশ্য দেখে জটায়ু তাকে রাবণের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন৷ জটায়ু রাবণের বিপক্ষে যথেষ্ট বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন কিন্তু বার্ধক্যের কারণে রাবণ অতি চতুরতার সাথে জটায়ুর বিপক্ষে জয় লাভ করেন৷ রাম ও লক্ষণ ; সুগ্রীবের বানরসেনা সহ সীতাদেবীর খোঁজে ঘুরতে ঘুরতে জটায়ুর সাক্ষাৎ পান৷ তিনি তাদেরকে জটায়ু-রাবণ যুদ্ধের বিষয়ে জানান এবং এও জানান যে রাবণ সীতাসহ দক্ষিণ দিকের সমুদ্রের নিকট অগ্রসর হয়েছে৷ জনশ্রুতি অনুযায়ী, এটা বিশ্বাস করা হয় যে রাবণ জটায়ুর পক্ষচ্ছেদ ঘটালে সে বর্তমান ভারতের কেরালা রাজ্যের রাজ্যের জটায়ু মঙ্গলম নামক স্থানে একটি পাথরের ওপর এসে পতিত হলে স্থানটির এরূপ নাম হয়৷ যদিও স্থানীয় উচ্চারণে এটি "চডয়মঙ্গলম" নামে পরিচিত৷ এই গ্রামের যে স্থানে শিলার ওপর জটায়ু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন সেই স্থানে কিছু বছর আগে অবধিও উন্মুক্ত আকাশে তার চঞ্চুচিহ্ন ও রামের পাদুকাচিহ্ন ছিলো, যা বর্তমানে আবৃত করা হয়েছে৷ আবার অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের লেপক্ষী অঞ্চলের সাথেও একই ইতিহাস জড়িত এবং কেরালার রামক্কলমেট্টুতে তার শেষকৃৃত্য সম্পন্ন হয়৷ রাম জটায়ুকে শায়িত অবস্থা থেকে উঠতে বলেন, যা তেলেগু ভাষাতে "লে পক্ষী" (বা ওঠো পক্ষী) উচ্চারিত হয়, এভাবেই এই স্থানটির নাম হয় লেপক্ষী৷ কিন্তু বাল্মিকী রামায়ণ অনুসারে রাম কখনোই বিন্ধ্য পর্বত অতিক্রম করেন নি৷ সর্বতীর্থ গ্রন্থ অনুসারে জটায়ু মহারাষ্ট্রে আকোলা আহমদনগর অঞ্চলে পতিত হন৷ সেখানে জটায়ুর নামে একটি মন্দির রয়েছে এবং মন্দিরের নিকটে পুকুরটিকে ছয় নদীর সম্মিলিত ধারার উপস্থিতির কথা বিশ্বাস করা হয়৷ রামায়ণের একাধিক আঞ্চলিক সংস্করণে কেরালা ও অন্ধ্রপ্রদেশের উক্ত স্থানগুলির নাম পাওয়া যায়, মূল বাল্মিকী রামায়ণে নয়৷
কোন মন্তব্য নেই
thanks. please visit again