রাবন রামায়ণের অন্যতম প্রধান চরিত্র ও প্রধান নায়ক।তিনি মহাকাব্য ও পুরানে বর্ণিত লঙ্কা দ্বীপের রাজা। কিন্তু বর্তমানে শ্রীলংকা যে সেই লঙ্কা সেটি এখনো নিশ্চিত নন। শ্রীলংকার ইতিহাসে রামায়নের এই তথ্যটি পাওয়া যায় না। রামচন্দ্র পত্নী সীতাকে হরণ করে তিনি লঙ্কায় নিয়ে যান। সীতার উদ্ধারকল্পে কিষ্কিন্ধ্যার বানরসেনার সাহায্যে রামচন্দ্র লঙ্কা আক্রমণ করলে রাবণের সঙ্গে তার যুদ্ধ হয়। এই ঘটনা রামায়ণ মহাকাব্যের মূল উপজীব্য। রামায়ণের উত্তরকাণ্ডে তার পূর্বজীবনের কথা বলা হয়েছে।রাবণের প্রকৃত নাম দশানন / দশগ্রীব। তার রাবণ নামটি শিবের দেওয়া। জনপ্রিয় শিল্পে তার দশটি মাথা, দশটি হাত ও দশটি পা দর্শিত হয়। মহাকাব্যে কামুক ও ধর্ষকামী বলে নিন্দিত হলেও রাবণকে মহাজ্ঞানী ও তাপসও বলা হয়েছে। উত্তর ভারতে দশেরা উৎসবে রাবণের কুশপুত্তলিকা দাহ আজও এক জনপ্রিয় প্রথা। রাবণ আদি যুগে সর্বপ্রথম মর্তে উড়ন্ত যান পুষ্পক রথ ব্যবহার করেন।রাবনের পিতা ব্রহ্ম ঋষি বিশ্রবা: এবং মাতা নিকষা । রাবন সংগীত রচনায় অতি নিপুন ছিলেন। তিনি শিবের পরম ভক্ত ছিলেন । সার্বক্ষণিক শিবের সান্নিধ্য পাওয়ার লক্ষ্যে তিনি যখন কৈলাশ পর্বতকে লংকায় প্রতিস্থাপনের জন্যে নিজ তপোবল দ্বারা দুই হস্তে তুলে নেন তখন মহাদেব তার পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি কৈলাশে স্পর্শ করলে রাবনের দুই হাত কৈলাশের নিচে চাপা পরে যায়। রাবন তখন প্রচন্ড চিৎকার করতে থাকে এবং শিবকে শান্ত করার নিমিত্তে তিনি একটি সংগীত রচনা করেন, যা পরে "শিব তাণ্ডব স্তোত্র" নামে পরিচিত হয় । শিবের ক্রোধ শান্ত হয় এবং মহাদেব রাবনকে তার চন্দ্রোহাশ নামক খড়গ তাকে উপহার দেন এবং অতি উচ্চ মাত্রায় তার রোদন করার কারণে তার নাম রাবন বলে পরিচিত হয়।প্রথম জীবনে রাবণ শিবের সাথে যুদ্ধ করে পরাজিত হয়ে পরে শিবের ভক্ত হন । রাবণ পূর্বজন্মে ছিলেন অভিশাপগ্রস্ত বিষ্ণুভক্ত বিজয়। রাবণ তার নিজশক্তিতে ত্রিলোকের অধিপতি হন । শ্রী রাম অবতারিত হন এবং রাবণকে বধ করেন । কথিত আছে ,রাম রাবণকে হত্যা করে ১ বৎসর ব্রহ্ম হত্যার অনুশোচনায় হিমালয়ের তপস্যা করেন। কারণ রাম ছিলেন পুরুষোত্তম।রাবন বাস্তু শাস্ত্রে এবং জ্যোতিষ শাস্ত্রে অতীব জ্ঞান রাখতেন। জ্যোতিষ শাস্ত্রে তার জ্ঞানের দ্বারা সে তার পুত্রের জন্মলগ্নে সকল গ্রহকে তার বসে এনে সেই তিথিকে মঙ্গল তিথী বানিয়ে নেন । রাবন ব্রহ্মার কঠোর তপঃ করেন এবং বর প্রাপ্ত হন যে, মানুষ(নর) ও বানর ছাড়া তাকে কেউ বধ করতে পারবে না । রাবন তার বৈমাত্রেয় বড় ভাই কুবের কে পরাজিত করে তার কাছ থেকে পুষ্পক বিমান নেন যা তাকে অতি অল্প সময়ে লঙ্কা থেকে যে কোনো জায়গায় নিয়ে যেতে পারত ।
কোন মন্তব্য নেই
thanks. please visit again