অতিকায় রাক্ষসরাজ রাবনের অন্যতম পুত্র। এঁর মাতার নাম ধান্যমালিনী। ইনি রাবণের ন্যায় বলশালী, বয়স্কদের শ্রদ্ধা করেন, শ্রুতিধর এবং অস্ত্রচালনায় অত্যন্ত পারদর্শী।ইনি সাম, দান ও ভেদ বিষয়ক রাজনীতি ও প্রয়োজনে মন্ত্রনাদানেও সুদক্ষ ছিলেন।এঁর দেহ অতি বিশাল। বিভীষণের বর্ণনায়, ''বিন্ধ্যাচল, অস্তাচল ও মহেন্দ্রপর্বতের মতো বিশাল তাঁর শরীর; অপ্রমেয় দেহ, অতিরথ; অতিবীর''। তাঁর দেহ অতি বিশাল বলেই তাঁর নাম অতিকায়।মহামতি অতিকায় সুবিজ্ঞ, অস্ত্রবিদ্যায় সুনিপুণ, মায়াবিশারদ। তিনি কঠোর তপস্যা দ্বারা ব্রহ্মার আরাধনা করে বিবিধ অস্ত্রলাভ করেন। যার দ্বারা তিনি বহু শত্রু পরাজিত করেছেন। ভগবান ব্রহ্মা এঁনাকে দেব-অসুরের অবধ্য হবার বরও দিয়েছেন এবং যুদ্ধে ব্যবহার্থে দিব্য কবচ ও সূর্যের মতো দিপ্তমান রথ দিয়েছেন। অতিকায় কর্ত্তৃক দেব-দানবদের বহুবীর পরাজিত হয়েছে। তিনি ঘোড়া বা হাতির পিঠে চড়ে যেকোনো অস্ত্র নিপুণভাবে অনায়াসে চালনা করতে পারতেন। অতিকায় যুদ্ধক্ষেত্রে শরজাল দিয়ে ইন্দ্রকে পরাজিত করেছেন। বরুণদেবের পাশকে প্রতিহত করেছেন। রামায়ণে অতিকায়কে দেব-দানবের দর্পনাশক বলা হয়েছে। তিনি অন্তরীক্ষে বিচরণ করতে পারতেন। মায়াযুদ্ধেও তিনি কৌশলী। দেবতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি পিতামহ সুমালীকে সাহায্য করেছেন। মৈন্দ, দ্বিবিধ, কুমুদ, নীল ও শরভ প্রভৃতি বানরগণ তাঁর হাতে পরাজিত হওয়ার পর লক্ষণ তাঁকে যুদ্ধে আহ্বান করে। অতঃপর লক্ষণ ও অতিকায়ের মধ্যে ভীষণ সংগ্রাম হয়। যখন অনেক চেষ্টাতেও অতিকায়কে বধ করা যাচ্ছে না, তখন পবণদেব সহসা আবির্ভূত হয়ে লক্ষণকে অতিকায় বধার্থে ব্রহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করতে বললেন। তখন লক্ষণ ধনুকে ব্রহ্মাস্ত্র যোজনা করে অতিকায়ের উপর প্রয়োগ করলেন। ব্রহ্মাস্ত্রের আঘাতে অতিকায়ের মস্তক ছিন্ন হয়ে গেল। হিমালয়শৃঙ্গের মতো সেই মস্তক ভূমিতে পতিত হলো।
কোন মন্তব্য নেই
thanks. please visit again