Header Ads

Header ADS

যুধিষ্টির কে ? who is yudhisthira in mahabharata

 যুধিষ্টির 




 যুধিষ্ঠির হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে পঞ্চপাণ্ডবদের জ্যেষ্ঠ। মহাভারতের মতে- ইন্দ্রধৈবত চন্দ্রসংযুক্ত অভিজিৎ নামক নক্ষত্রে অষ্টম মুহূর্তে মধ্যাহ্ন-সময়ে ইনি জন্মগ্রহণ করেন। কিমিন্দম মুনির অভিশাপে পান্ডু সন্তান উৎপাদনে অক্ষম ছিলেন। এই অভিশাপের কারণে, মাদ্রী এবং কুন্তী উভয়ই স্বামী-সংসর্গ থেকে বঞ্চিত হন। পরে কুন্তী সন্তান কামনায় পাণ্ডুর অনুরোধে তিন দেবতার সাথে মিলিত হন এবং তিনটি সন্তান লাভ করেন। কুন্তী প্রথম আহ্বান করেছিলেন ধর্ম দেবতাকে। তার ঔরসে কুন্তীর গর্ভে যুধিষ্ঠিরের জন্ম হয়। যুধি (যুদ্ধে) স্থির থাকতেন বলে, তাঁর নাম হয়েছিল যুধিষ্ঠির। অবশ্য কয়েকজন আধুনিক মহাভারত বিশেষজ্ঞ বলেন, ধর্মের অবতার ছিলেন। স্বয়ংবর সভায় অর্জুন লক্ষ্যভেদ করে দ্রৌপদীকে লাভ করলে, সভায় আহুত অন্যান্যরা পাণ্ডবদের আক্রমণ করে। পাণ্ডবরা যুদ্ধে সকলকে পরাজিত করে দ্রৌপদীকে সাথে নিয়ে কুন্তীর কাছে আসেন। দ্রৌপদীকে নিয়ে পঞ্চপাণ্ডব যখন ঘরে ফেরেন, তখন কুন্তী ঘরের মধ্যে ছিলেন। পঞ্চপাণ্ডব তাঁদের মাকে উদ্দেশ্য করে বলেন যে, তাঁরা একটি অপূর্ব সামগ্রী ভিক্ষা করে এনেছেন। কুন্তী না দেখেই বলেন, তোমরা সকলে মিলে সেই জিনিস ভোগ কর। এরপর দ্রৌপদীকে দেখে ইনি বিব্রত হয়ে পড়েন। পরে কৃষ্ণ-দ্বৈপায়নের  বিধান মতে- পঞ্চপাণ্ডব দ্রৌপদীকে বিবাহ করেন। উল্লেখ্য দ্রৌপদীর গর্ভে যুধিষ্ঠিরের প্রতিবিন্ধ্য নামক পুত্র জন্মে। এছাড়া তিনি গোবাসনের কন্যা দেবিকার স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত হয়ে দেবিকাকে লাভ করেন। এঁর গর্ভে বৌধেয় নামক এক পুত্র জন্মে। শকুনির পরামর্শে দুর্যোধন যুধিষ্ঠিরকে পাশা খেলায় নিমন্ত্রণ করেন। যুধিষ্ঠির উক্ত খেলায় রাজী হলে, শকুনি কপট পাশাতে যুধিষ্ঠিরকে পরাজিত করেন। এই খেলায় যুধিষ্ঠির দ্রৌপদীসহ রাজ্যপাট হারান। দুর্যোধনের নির্দেশে দুঃশাসন রজস্বঃলা দ্রৌপদীর চুল ধরে সভায় আনেন। কর্ণের পরামর্শে প্রকাশ্য সভায় দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করা শুরু করলে, দ্রৌপদীর কাতর আহ্বানে কৃষ্ণ অলৌকিকভাবে তাঁকে অশেষ কাপড় দ্বারা আবৃত করে রাখেন। 

যুধিষ্ঠির নহুষের কাছে ভীমের মুক্তি দাবী করলে, নহুষ যুধিষ্ঠিরের কাছে কিছু প্রশ্নের উত্তর চেয়ে বলেন যে, প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিলেই তবে ভীমকে মুক্তি দেবেন। এরপর যুধিষ্ঠির নহুষের প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিয়ে ভীমকে উদ্ধার করেন। এই সময় নহুষ অভিশাপ মুক্ত হন। যুধিষ্ঠির বিরাটরাজের সভায় কঙ্ক নামে দ্যুতনিপুণ ব্রাহ্মণ হিসাবে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অজ্ঞাতবাস শেষে যুধিষ্ঠির দুর্যোধনের কাছে রাজ্য ফিরে চান। কিন্তু দুর্যোধন তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর যুধিষ্ঠির কৃষ্ণকে দূত হিসেবে পাঠান । সকল প্রস্তাবই দুর্যোধন অগ্রাহ্য করেন। কৃষ্ণ তখন ৫ পাণ্ডবের জন্য ৫ টি গ্রাম প্রার্থনা করেন।


 দুর্যোধন তাতেও অসম্মত হন এবং বলেন বিনা যুদ্ধে উনি সূঁচের ডগায় যতটুকু পরিমাণ ভূমি ধরবে উনি ততটুকুও দেবেন নাএরপর যুধিষ্ঠির দুঃখিত হয়ে যুদ্ধের ব্যাপক আয়োজন সম্পন্ন করেন। যদুবংশ ধ্বংসের পর ইনি অভিমন্যুর পুত্র পরীক্ষিৎ-কে রাজ্যে অভিষিক্ত করেন এবং যুযুৎসু'র উপর রাজ্যের ভার অর্পণ করে চার ভাই ও দ্রৌপদীসহ মহাপ্রস্থানের প্রস্তুতি নেন। এই সময় তাঁদের সাথে ধর্মদেবতা কুকুররূপে সঙ্গ নেন। পথিমধ্যে চার ভাই ও দ্রৌপদীর পতন ঘটে। এরপর একমাত্র কুকুরকে সঙ্গী করে ইনি স্বর্গদ্বারে উপস্থিত হন।


 কিন্তু ইন্দ্র যুধিষ্ঠিরকে বলেন যে, তিনি কুকুরসহ স্বর্গে প্রবেশ করতে দিবেন না। উত্তরে ইনি বলেন যে, প্রভুভক্ত কুকুর ছাড়া স্বর্গে প্রবেশ করলে, তা নির্দয়তা হবে। সুতরাং কুকুর ছাড়া তিনি স্বর্গে প্রবেশ করবেন না। এরপর ধর্ম কুকুরের রূপ পরিত্যাগ করে যুধিষ্ঠিরকে বলেন যে, যুধিষ্ঠির তোমার সমান স্বর্গে কেউ নেই। স্বর্গে প্রবেশ করে তিনি তাঁর ভাইদের দেখতে চান। দেবদূতরা তাঁকে নরকে নিয়ে যান। সেখানে ভাইদের দেখতে পেয়ে স্বর্গে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানালে, ইন্দ্র তাঁকে বলেন যে, যুধিষ্ঠির অশ্বত্থামার মৃত্যু সংবাদ দিয়ে দ্রোণাচার্যের সাথে প্রতারণা করেন বলে, তাঁকে কৌশলে নরক দর্শন করান হয়েছে। এরপর যুধিষ্ঠির পাণ্ডবদের নিয়ে স্বর্গে প্রবেশ করেন।

কোন মন্তব্য নেই

thanks. please visit again

Blogger দ্বারা পরিচালিত.