Header Ads

Header ADS

নন্দীমহারাজ কে? Who is Nandimaharaj?

কে এই নন্দী মহারাজ ?? 

মহাদেবের দ্বার রক্ষক ও পরম শিব ভক্ত হলেন নন্দী মহারাজ। এমনকি যাত্রা পথে নন্দীর পিঠে চড়েই ত্রিভুবন পরিক্রমা করেন মহাদেব। মহাদেব যখন ধ্যানে মগ্ন থাকতেন সেখানে কারো প্রবেশের অনুমতি থাকত না। এই দ্বার পাহারা দেন নন্দী মহারাজ ।  




নন্দীঃ নন্দী হল চিরন্তন প্রতীক্ষার প্রতীক, কারণ অপেক্ষাকে ভারতীয় সংস্কৃতিতে সবচেয়ে বড় উত্কর্ষ বলে মনে করা হয়। যিনি শুধু সাবলীলভাবে বসতে এবং অপেক্ষা করতে জানেন তিনি স্বাভাবিকভাবেই ধ্যানশীল। নন্দী আশা করছে না যে আগামীকাল শিব বেরিয়ে আসবেন। সে কিছু আশা কিংবা প্রত্যাশা করছে না। সে শুধু অপেক্ষা করছে। সে চিরকাল অপেক্ষা করবে। নন্দী হলো শিবের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহচর, কারণ সে গ্রহণযোগ্যতার সারমর্ম। মন্দিরে যাওয়ার আগে আপনার নন্দীর গুণ থাকা উচিৎ – সাবলীলভাবে বসার জন্য। আপনি স্বর্গে যাওয়ার চেষ্টা করছেন না, আপনি এটি বা সেটি পাওয়ার চেষ্টা করছেন না - আপনি কেবল বসে আছেন।

মহাদেবের অন্যতম সহচর সে। তাই যেখানেই শিব, সেখানেই নন্দী। শাস্ত্র অনুসারে নন্দী হল পুরুষার্থ অর্থাত্‍ কঠোর পরিশ্রমের প্রতীক। এখন প্রশ্ন হল কেন শিব মন্দিরের বাইরে সব সময় নন্দীর অবস্থান।
সমুদ্র মন্থনের পর অমৃতের ভাগ নিয়ে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে লড়াই বাঁধে। এই পরিস্থিতিতে অমৃতের পর আরও ভালো কিছু পাওয়ার আশায় সুমুদ্র মন্থন চালিয়ে যাওয়া হয়। অমৃতের পর তখন সমুদ্র গর্ভ থেকে উঠে আসে ভয়ানক বিষ কালকূট। গোটা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয় সেই বিষের ঝাঁঝে। তখন সৃষ্টি রক্ষা করতে সেই বিষ নিজের গলায় ধারণ করেন মহাদেব। বিষ পান করার সময় কয়েক ফোঁটা চলকে বাইরে পড়ে যায়। তখন সেই কয়েক ফোঁটা বিষ জিভ দিয়ে চেটে নেয় নন্দী। নন্দীর এই কাজে খুশি হয়ে মহাদেব তাঁকে আশীর্বাদ করেন যে শিব ভক্তরা সবাই নন্দীকেও প্রণাম জানাবেন।
সব সময় মন্দিরের বাইরে শিব মূর্তির দিকে মুখ করে বসে থাকে নন্দী। নন্দীর চোখ যেমন মহাদেবের দিকে থাকে, আমাদের মনও তেমন সব সময় নিজের আত্মার দিকে থাকা দরকার। অন্যের ভুল আমরা সবাই দেখতে পাই, কিন্তু নিজেকে ভালো করে চিনতে শিখলে তবেই নিজের ভুলগুলোও চোখে পড়বে। আমাদের শরীর যখন নিজের আত্মার প্রতি উন্মুখ হয়ে থাকবে, তখনই আমাদের মন শুদ্ধ হবে।




শিবের পাশে সর্বদা থাকেন এই দুজন, এমনকি অনেক শিবমন্দিরের সামনে নন্দীর মূর্তিও থাকে, বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে। তবে সে মূর্তি সচরাচর বৃষ বা ষাঁড়ের। তবে এটা নন্দীর আসল রূপ নয়,

নন্দী ও ভৃঙ্গী কে নিয়ে পুরানে অনেক কথাই বলা আছে কূর্মপুরাণে নন্দী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, মহাদেবের এই প্রধান অনুচরটি করালদর্শন, বামন, বিকটাকার, মুণ্ডিতমস্তক, ক্ষুদ্রবাহু ও মহাবল।পূর্বে নন্দী মহারাজ পৃথক দেবতা হিসেবেও পূজিত হতেন পরবর্তীতে তিনি শিবের বাহন হিসেবে স্থান পান|

শিব মহাপুরাণ মতে, নন্দী শিলাদ মুনির পুত্র। শিলাদ ছিলেন ভগবান শিবের পরম ভক্ত এবং শিবের আশীর্বাদেই নন্দীর জন্ম হয়েছিলো এবং শিব স্বয়ং তাকে চিরঞ্জীবী হওয়ার বর দেন ও নিজের বাহন হিসেবে স্থান দেন|রামায়ণেও নন্দীর উল্লেখ পাওয়া যায় যেখানে অহংকারী রাবন কৈলাশ এসে নন্দীকে তার চেহারার জন্যে অপমান করেন ও বানর বলেন, নন্দী তাকে অভিশাপ দিয়েছিলো যে এক বানর তার পতন ডেকে আনবেন, পরে তাই হয়েছিলো|

নন্দীর ন্যায় ভৃঙ্গীও শিবের অনুচর। নন্দী যেমন হৃষ্টপুষ্ট, ভৃঙ্গী তেমনই রুগ্ন , কঙ্কালসার। ভৃঙ্গী আগে ছিলেন এক মুনি, শিবের উপাসক। তিনি শিবের সাথে পুজোয় কিছুতেই রাজি নন। ক্রুদ্ধ পার্বতী অভিশাপ ভৃঙ্গী কে অভিশাপ দিলেন। সেই অভিশাপে ভৃঙ্গী কঙ্কালে পরিণত হলেন। দু’পায়ে আর দাঁড়াতে পারেন না তিনি, তখন শিবের আশীর্বাদে তাঁর তৃতীয় চরণের সৃষ্টি হল। কিন্তু তবু ভৃঙ্গী পার্বতীর পুজো করবেন না। তখন শিব তাঁকে নিজের অর্ধনারীশ্বর রূপ দেখালেন, যাতে তিনি বুঝতে পারেন যে পার্বতী শিবেরই অংশ। পরবর্তীতে তিনিও হয়ে উঠলেন শিবের অনুচর, একত্রে উচ্চারি হতে শুরু হয় নন্দী ও ভৃঙ্গীর নাম|




কোন মন্তব্য নেই

thanks. please visit again

Blogger দ্বারা পরিচালিত.